সরকার চাইলে মাঠ ছাড়বে সেনাবাহিনী: কর্নেল ইন্তেখাব
- By Jamini Roy --
- 13 November, 2024
সরকারের আদেশে সেনাবাহিনী মাঠে নামানো হয়েছে, এবং যখন সরকার চাইবে তখন সেনাবাহিনী ফিরে যাবে বলে জানিয়েছেন মিলিটারি অপারেশন্সের ডিরেক্টর কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান। বুধবার (১৩ নভেম্বর) ইন এইড টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার খান আরও বলেন, সরকারের নির্দেশে সেনাবাহিনী দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। সেনাবাহিনীর কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি অব্যাহত রয়েছে।
যুদ্ধবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রতিরোধ করতে এবং দেশজুড়ে বিরোধী শক্তির কার্যক্রম সীমিত করতে গত ২০ জুলাই রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে। এই সময়ে সেনাবাহিনী ক্যান্টনমেন্টের বাইরে মাঠে অবস্থান নেয় এবং সেখান থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে কাজ করে। হাসিনা সরকারের পতনের পর ৫ আগস্ট থেকে সেনাবাহিনী দেশে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
যেহেতু পুলিশের কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি এবং দেশে অপরাধ প্রবণতা বেড়েছিল, ১৭ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দ্বারা। প্রজ্ঞাপনে সেনাবাহিনীকে ৬০ দিনের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে দেয়নি এবং অভিযুক্ত অপরাধীদের গ্রেফতার করেছে।
সেনাবাহিনী শুধু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই নয়, শিল্পাঞ্চল, সড়কসহ বিভিন্ন বৈরি পরিস্থিতি মোকাবিলায়, এবং সাম্প্রতিক বন্যা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে কাজ করেছে। পাশাপাশি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা সেবায়ও তারা নিয়োজিত রয়েছে।
যখন সেনাবাহিনীর কার্যক্রম চলছিল, তখন মানবাধিকার লঙ্ঘন বা নির্যাতনের অভিযোগ উঠলে তা সম্পর্কে কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার বলেন, “সেনাবাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘন বা বিচারবহির্ভূত হত্যা প্রতিরোধে অত্যন্ত সচেতন রয়েছে। আমাদের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের আদেশ রয়েছে যে কোনো পরিস্থিতিতেই বিচারবহির্ভূত হত্যা যেন না ঘটে। মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অন্য যেকোনো অপরাধ বিষয়ে আমাদের কঠোর মনোযোগ রয়েছে।”
এছাড়া, সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা মোতায়েনের পর থেকে ৬ হাজারের বেশি অবৈধ অস্ত্র, প্রায় ২ লাখ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে এবং আড়াই হাজারেরও বেশি ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে।
এ বিষয়ে কর্নেল ইন্তেখাব হায়দার আরও বলেন, “আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করছি যাতে দেশজুড়ে শান্তি বজায় থাকে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সঠিকভাবে রক্ষা পায়। সেনাবাহিনীর এই কার্যক্রম দেশের মানুষের নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে অবিচলিতভাবে চলবে।”